মানুষ যেন এক
জোনাকি জীবন
– মিহির হারুন
শৈশবের কাওকে এখন দেখিনা,
বাসি রুটির মতো ভাঁজ পরা দুএকটা মুখ চায়ের কাপে লুকিয়ে বেড়ায়।
মুখছেদ কোথায় হারিয়ে গেছে, পরিতোষ-ভোলানাথ থেকেও আজ না থাকা প্রায়।
দেলোয়ার, সাইফুল তবু মাঝেমধ্যে ফোন দিয়ে বলে, “দোস্তো কেমন আছিস”?
ব্যাস্ত মান্নান মোফাজ্জল; সংসার গিলে আছে ওদের ষোলোআনা জীবন।
নিমাইয়ের ঘাড়ে বাঁশের বোঁঝা,
চোখ তুলে দেখেনা আকাশ
খোঁজে না কোনটা তার মেঘের পাহাড়।
হিসেব কষে, দু’বেলা খাবার কি করে নিয়ে যায় পুরোটা জীবন।
বন্ধুর মতোই অনেক পাখির নাম
ভুলে গেছি,
কেও পাশ কেটে চলে গেলে
খুব চেনা মনে হয়; কবিতার পঙক্তির মতো
হারিয়েছি সব মুখস্থ নাম।
শিপ্রার মুখ কেমন ছিলো এখন আর মনে আসেনা,
অথচ চোখে চোখ রাখা খেলায় অপলক চেয়ে কতো কেঁদেছি।
নিশি কেমন আছে
এখনো কি জানলায় দোলনচাঁপা পোষে
আবছায়া জ্যোৎস্না এখনো কি শিস দিয়ে বাইরে ডাকে তারে?
মাকড়ের জালে সময় আটকে আছে, মৃত কিট প্রশ্নের মতো বিঁধে আছে সব।
কতো ঘাস ফুল, গঙ্গাফড়িং, শালিকের মতো উড়ে গিয়ে ফিরেনি খাঁচায়।
শৈশবের মতো ঘুঘুরা কোথায় উড়ে যায়
আনাই গোটা, ধুতুরাফল, হরিণ পোকা?
সবুজ চারা দুলতে দুলতে কি করে
ধান পেকে যায়।
ফসল কাটা শেষে শুনশান নিরবতায় রাত নামে,
জোনাকির আলো নিভে গেলে মাটিতে ঘুমায়।